পটুয়াখালীর গলাচিপায় অবাধে জাটকা ইলিশ বিক্রি হলেও প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় এটা রমরমা ব্যবসায় পরিনত হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন হাটে শতশত জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। ভোর না হতেই শুরু হয় বেচাকেনা। দূর দূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে আড়তদারদের থেকে জাটকা ইলিশ কিনে স্থানীয় হাটবাজারে বিক্রি করছেন। প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের নিয়মিত অভিযান না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে দাবি সচেতন মহলের।
রবিবার (২০ নভেম্বর) সকালে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গলাচিপা থেকে খেয়াযোগে এবং ফেরিযোগে গোলখালী ইউনিয়নের হরিদেবপুর মাছের বাজারে এবং হরিদেবপুর থেকে পটুয়াখালী, বরিশাল, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, ভাঙ্গা এবং ঢাকার বিভিন্ন স্থানে যায় এসব জাটকা মাছের চালান। রামনাবাদ, বুড়াগৌরঙ্গ, তেতুলিয়া নদী থেকে প্রতিনিয়ত জেলেরা জাটকা ধরে আড়ত ও হাট-বাজারে বিক্রি করছেন। উপজেলার গলাচিপা পৌরসভার দুইটি মাঝের বাজার, উলানিয়া, চিকনিকান্দী, হরিদেবপুর, আমখোলা, পানপট্টি, বদনাতলী, চরকাজল, চরবিশ্বাসসহ উপজেলার ছোট-বড় হাট-বাজারে জাটকা বিক্রি হচ্ছে।
কিন্তু এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য বিভাগ বা প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সমাজসেবক বলেন, নদীতে জাটকা শিকার করে স্থানীয় আড়ত ও হাট-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি বছর প্রশাসন কিছু কিছু অভিযান চালালেও এবার এখনো কোনো অভিযান চোখে পড়েনি। দ্রুত জাটকা নিধন বন্ধের দাবি জানান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, এবার এখনো অভিযান শুরু হয়নি। মাছ শিকার ছাড়া বিকল্প কোনো কাজ না থাকার কারণে বাধ্য হয়েই আমাদের জাটকা শিকার করতে হয়। উলানিয়া বাজারের আড়তদার সায়েম বলেন, অন্যান্য মাছ ব্যাবসায়ীরাও জাটকা বিক্রি করেছেন।
প্রশাসন যদি জাটকা ধরা বন্ধ করে দিতে পারে তাহলে বিক্রিও বন্ধ হবে। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী বলেন, আমাদের অভিযান অব্যহত আছে। তবে অবরোধের সময় অভিযান একটু বেশি ছিল। অবরোধ না থাকায় এখন আমরা কারেন্ট জালের উপর অভিযান বেশি করছি। যাতে কেউ জাটকা ইলিশ ধরতে না পারে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, বিভিন্ন বাজারে ও আড়তে অভিযান চলছে। যে বা যারা জাটকা বিক্রি করছেন তাদের তথ্য পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। জাটকা ইলিশ বিক্রির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।